চরম সাফল্য: চন্দ্রযান ও সূর্যের পর এবার নতুন গ্রহে আধিপত্য ঘোষণা করলো ইসরো (ISRO)

চাঁদের সব থেকে যে দক্ষিণ মেরু সেখানে পদার্পণ করে কয়েক মাস আগেই ইতিহাস গড়েছিল ভারত এবং সারা বিশ্ব থেকে ইসরো কে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়েছিল। আর তারপর এবার ইসরো পরবর্তী সাফল্যের পথে এগিয়েছে এবং সূর্যের দিকে আদিত্য নামক মহাকাশ যানকে পাঠিয়েছে। আর এবার আরো এক ইতিহাস গড়ার পথে ভারত। চাঁদে বিজয় পতাকা উড়িয়ে, সূর্যের পথে পাড়ি দিয়ে, মঙ্গল ছুঁয়ে এবার সৌরজগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল গ্রহে পাড়ি দিতে চলেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো।

শুক্রে যাওয়ার প্রস্তুতি তুঙ্গে। সেজেগুজে তৈরি হচ্ছে শুক্রযান। এখন যন্ত্রপাতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলের পরে আরও একবার ভিন গ্রহে পাড়ি দিতে চলেছে ভারত। দিল্লিতে ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল সায়েন্স অ্যাকাডেমিতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন ইসরো প্রধান এস সোমনাথ।মঙ্গল জয় আগেই করেছে ভারত। মঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভারতের মঙ্গলযান ‘মম’। চাঁদে নেমে ইতিহাস গড়েছে ইসরো। চাঁদ, মঙ্গলের পরে এবার ইসরোর বড় লক্ষ্য সৌরজগতের আরও এক গ্রহ শুক্র (Shukrayaan)। এই গ্রহে পাড়ি দেবে ইসরোর শুক্রযান। তার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ঐতিহাসিক এই মিশনে ইসরোর পাশে দাঁড়িয়েছে ফরাসি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সিএনইএস।

```

শুক্র-যাত্রা কবে হবে এখনও তার ঘোষণা হয়নি। শোনা যাচ্ছে, সৌরযান সূর্যে পাড়ি দেওয়ার পরেই শুক্র-অভিযানে বেরোবে ইসরো। শুক্রযানের প্রযুক্তি ও তার যন্ত্রপাতির কিছুটা অংশ তৈরি করছে ফরাসি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস। ভাইরাল (ভেনাস ইনফ্র্যারেড অ্যাটমস্ফিয়ার গ্যাসেস লিঙ্কার)এই যন্ত্র তৈরি দায়িত্বে রয়েছে ফ্রান্সের এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড স্পেস অবজারভেশন ল্যাবরেটরি এবং ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল সায়েন্টিফিক রিসার্চ সেন্টার সিএনআরএস।

শুক্রগ্রহের কক্ষে পৌঁছে নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা করবে শুক্রযান। প্রথমে ঠিক হয়েছিল ১৭৫ কিলোগ্রাম ওজনের যন্ত্রাংশ নিয়ে পাড়ি দেবে শুক্রযান, তবে পরে পে-লোডের ওজন কমিয়ে ১০০ কিলোগ্রাম করা হয়। এই মহাকাশযানে থাকবে ভেনাস এল অ্যান্ড এস-ব্যান্ড এসএআর, ভারটিস (হাই ফ্রিকুয়েন্সি রেডার), ভিটিসি থার্মাল ক্যামেরা, লাইটনিং সেন্সর, সোলার অকুলেশন ফোটোমেট্রি, এয়ারগ্লো ইমেজার, মাস স্পেকট্রোমিটার, প্লাজমা অ্যানালাইজ়ার, রেডিয়েশন এনভায়রনমেন্ট, সোলার সফট এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার, প্লাজমা ওয়েভ ডিটেকটর ইত্যাদি।

```

শুক্র গ্রহ দেখতে উজ্জ্বল হলেও এর বায়ুমণ্ডল কিন্তু মোটেও সুখকর নয়। ইসরো জানিয়েছেন, শুক্রের বায়ুমণ্ডল খুব ঘন, অ্যাসিডে ভরা। বায়ুর চাপ পৃথিবীর থেকে প্রায় ১০০ গুণ বেশি। এমন পরিমণ্ডলে ঢোকা খুবই বিপজ্জনক। শুক্রের কাছে পৌঁছে কী ধরনের নতুন পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো যেতে পারে, তা নিয়ে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং গবেষকদের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে ইসরোর তরফে।

ভারতের তরফে বেশ কয়েক ডজন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরো। তার পাশাপাশি, বাইরের দেশের বিভিন্ন সংস্থাকেও গবেষণা চালানোর সুযোগ করে দিতে চায় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।